গাজীপুরে গণপূর্তের প্রকৌশলীকে মারধর, হুমকি
আমাদের গাজীপুর রিপোর্ট: স্বাক্ষর না করায় গাজীপুরে গণপূর্তের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে মারধর ও হুমকি প্রদান করা হয়েছে। এক প্রভাবশালী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে মারধরের এ অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ওই প্রকৌশলী গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার গাজীপুর গণপূর্তের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) মো. মনিরুল ইসলাম অফিসের এক সহকর্মীর রুমে বসে ছিলেন। এসময় মো. আতাউর রহমান (৫৫) নামের এক প্রভাবশালী ঠিকাদার আরো একজনকে সাথে নিয়ে সেখানে ঢুকে পড়ে। এরপর, আপনি ফোন রিসিভ করেন নি কেন, মনিরুলকে এমন প্রশ্নের পর আতাউর প্রাক্কলনের একটি কাগজ বের করে স্বাক্ষর করতে বলে। অফিস বা মনিরুল কাগজটি তৈরি না করায় তাৎক্ষণিক স্বাক্ষর দিতে রাজি হননি। মনিরুল ঠিকাদার আতাউরকে বলেন, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না দেখে আমি প্রাক্কলনে স্বাক্ষর করবো না। এতে ওই ঠিকাদার ক্ষিপ্ত হয়ে মনিরুলকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও চড়-থাপ্পর দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা-ফুলা জখম করে এবং জবাই হত্যার হুমকি প্রদান করে। পরে গণপূর্তের এটিএম সামসুজ্জামান, পিয়ন মিঠু (২৬) ও সিকিউরিটি গার্ড রাজু (২৮) এগিয়ে এসে মনিরুলকে রক্ষা করে। এছাড়াও মনিরুলের দুই চোখ তুলে নেয়া ও হত্যার হুমকি প্রদান করে চলে যান তারা। জানা গেছে, আতাউর রহমান গাজীপুর মহানগরীর বিলাসপুর এলাকার মো. কাজিম উদ্দিনের সন্তান। তিনি বাংলাদেশ কৃষকলীগ গাজীপুর মহানগর শাখার সহ সভাপতি। এদিকে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট আনুমানিক ২টার দিকে গাজীপুর গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ এর দপ্তরে তছনছ, কর্মকর্তাকে গালিগালাজসহ শারিরীক নির্যাতন করে ঠিকাদার আতাউর। পরে ভবিষ্যতে গাজীপুর গণপূর্তের কোন দপ্তরে আসবেন না এবং এ দপ্তরের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না বলে মুচলেকা প্রদান করে। এরপরও গাজীপুর গণপূর্তের একাধিক প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ পান তিনি। উপ-সহকারী প্রকৌশলী এটিএম সামসুজ্জামান বলেন, আমার রুমে বসা থাকা অবস্থায় ঘটনাটি ঘটে। আমি ডিসেম্বর মাসে এখানে কাজে যোগ দিয়েছি। মনিরুল ইসলাম বলেন, ঠিকাদার আতাউর অতর্কিত প্রবেশ করে প্রাক্কলনে স্বাক্ষর করতে বলে। কিন্তু বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা না দেখে আমি প্রাক্কলনে স্বাক্ষর করবো না জানালে আমাকে শারিরীক হেনস্থা করে। অবস্থা বেগতিক দেখে সাথে সাথে ৯৯৯ নাম্বারে কল দিলে আমার ফোন কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। মাথায় ও কাধে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দিতে থাকে। আমার চিৎকার শুনে অফিসের পিয়ন ও সিকিউরিটি গার্ড বাঁচাতে আসে। পরে আতাউর ও তার ছেলে রুম থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদার আতাউর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি। মেট্রোপলিটন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে এখনো কোন আসামীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। গণপূর্ত গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা বলেন, আমি সিভিলের নির্বাহী আর ইলেকট্রিক্যালে তাদের নিজস্ব নির্বাহী প্রকৌশলী আছে। সরকারি প্রক্রিয়া যা হবে সব তাদের চ্যানেলে হবে। আমাদের অফিসের প্রতিনিধিরা বিষয়টি সমাধান করার চেষ্ঠা করেছিলো কিন্তু ঠিকাদার আসেনি। যেহেতু ইলেকট্রিক্যালের নির্বাহী এখানে বসে না, আমি বসি, আমার প্রয়োজনীয় যে সমন্বয় সেটা আমি করে দেবো। এটাতো এমন না যে পত্রিকায় ফ্লাশ দিয়ে বলা উচিত বা বলা হবে তেমন কিছু তো না।
Comments are Closed