Main Menu

ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে বোরো ধান চাষাবাদ ব্যয়

আমাদের গাজীপুর রিপোর্ট:
গাজীপুর জেলায় বোরো ধান প্রায় চাষ পুরোটাই সেচ নির্ভর । ডিসেম্বর মাসের মধ্য সময় থেকে মার্চ মাসের পুরো সময় পর্যন্ত থাকে সেচের পিক সিজন। গভীর সেচ পাম্প বসিয়ে রোপণকৃত বোরো ধানের জমিতে নিয়মিত দিতে হয় পানি। এদিকে জঃলানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে গাজীপুরে বোরো রোপণে ব্যাপক হারে বাড়ছে কৃষি উৎপাদনের ব্যয়। আগের তুলনায় এখনকার আধুনিক সময়ে কৃষি উৎপাদনটা অনেকটা যন্ত্র নির্ভর। বিশেষ করে জমি চাষ,পানি সেচ, ধান কাটা-মাড়াই, পরিবহন এসব কিছুতেই ব্যবহৃত হয় তেল চালিত যন্ত্র।
জ¦ালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে জেলার কাপাসিয়া উপজেলায় এবার বিঘা প্রতি বোরো ধানের জমি প্রতিবার চাষ দিয়ে প্রস্তুত করতে ছোট পাওয়ার টিলারের (টাক্টর) ভাড়া পূর্বে ছিলো ২শ থেকে ৩শ টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪শ থেকে ৫শ টাকা। অপরদিকে বড় পাওয়ার টিলার দিয়ে ১ বিঘা প্রতি চাষে ব্যয় ৫শ টাকা।
উপজেলার সিংগুয়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা মো: জহিরুল ইসলাম জানান, বোরো ধান রোপণের জন্য জমি ভেদে ৩ থেকে ৪ বার চাষ করতে হয়। পূর্বে ছোট পাওয়ার টিলার (লাঙ্গল) দিয়ে ১ বিঘা জমি রোপণের জন্য প্রস্তুত করতে ব্যয় হতো ৬শ থেকে ৮শ টাকা, বর্তমানে একই জমি প্রস্তুত করতে ব্যয় হচ্ছে ১২শ টাকা। অপরদিকে বড় ট্রলি বা পাওয়ার টিলার (লাঙ্গল) দিয়ে রোপণের জন্য প্রস্তুত করতে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার টাকা। পূর্বে ১ হেক্টর জমি চাষ করতে খরচ হতো ৪ হাজার ২শ টাকা কিন্তু একই জমি রোপণের জন্য প্রস্তুত করতে বর্তমানে ব্যয় ৮ হাজার ৪শ টাকা লাগছে। একই ভাবে বাড়ছে পানি সেচের মূল্যও।
তিনি আরো জানান, জ¦ালানি তেল ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এবছর ধান কাটা-মাড়াইসহ পরিবহন ব্যয়ও বাড়বে। তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে বিনামূল্যে বীজ পাওয়ায় কিছুটা উপকার হয়েছে। একই কথা বলেন উপজেলার কামারগাঁও গ্রামের কৃষক মো: ইমাম উদ্দিন, রামপুর গ্রামের কৃষক মো: লেহাজ উদ্দিন, রিয়াজ উদ্দিনসহ আরো কয়েকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক্টর চালক জানান, আগের বছর ডিজেলের দাম ছিলো ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা যা বর্তমানে একলাফে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা হয়েছে। তেলের মূল্য বেশি হওয়ায় বোরো ধানের জমি চাষে মূল্য বেশি নিতে বাধ্য হচ্ছি। সরকার পানি সেচ কাজে বিদ্যুতে যেমন ভর্তুকি দিয়েছেন, ঠিক তেমনি ভাবে কৃষি কাজে ব্যবহৃত জ¦ালানি তেলে ভর্তুকি দিলে উৎপাদন ব্যয় কম হতো।
গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পুরো জেলায় এবার বোরে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৭,১৪০ হেক্টর জমি। আর ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৪ মে.টন।

এ বিষয়ে গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম খান দৈনিক আনন্দবাজরকে বলেন, উৎপাদন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণোদনার আওতায় জেলার ৫টি উপজেলায় ২ হাজার করে মোট ১০ হাজার কৃষকের মাঝে শুধুমাত্র বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। অন্যদিকে ৫ উপজেলায় মিলে ৭ হাজার কৃষকের মাঝে সার ও বীজ প্রণোদনা হিসেবে প্রদাণ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কৃষকদের মাঝে সরকারী সহায়তায় কিছুটা হলেও বোরো মৌসুমে উৎপাদন ব্যয় কমবে বলে আশা করছি।






Comments are Closed