চাইনিজ ব্যাটারী কারখানার বিরুদ্ধে পরিবেশ ও বায়ু দূষণের অভিযোগ
আমাদের গাজীপুর রিপোর্ট: গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী জরুন স্থানীয় নাম কুদ্দুসনগর এলাকায় রহমান ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা চাইনিজ ব্যাটারী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পরিবেশ ও বায়ুদূষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধীক স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, ডংএও নিউ ইলেক্ট্রিক কোম্পানী লিমিটেড গত কয়েক বছর যাবৎ এই এলাকায় ডংইয়া ব্যাটারী তৈরী ও বাজারজাত করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদনমূখী হওয়ায় পরিবেশ ও বায়ুদূষণ করছে প্রতিনিয়ত। প্রতিষ্ঠানির উত্তর পার্শে রয়েছে ৭তলা বিশিষ্ট বায়তুল হক জামে মসজিদ ও মাদ্রাসা। প্রতিষ্ঠানের সামনে পশ্চিম পার্শে রয়েছে দু‘টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকা। দক্ষিনে রয়েছে স্ট্যার্ন্ডাড গ্রুপের প্রতিষ্ঠান। প্রায় দশ হাজার শ্রমিক কাজ করছে স্ট্যার্ন্ডাড গ্রুপে। পূর্বে পোশাক কারখানা ও আবাসিক এলাকা। এদিকে সিরাজগঞ্জ আদর্শ বিদ্যা নিকেতন এর প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম জানান, চায়না ব্যাটারি কারখানা থেকে ঝাঁঝালো কালো ধোঁয়া বের। প্রায় সময়ই স্কুলে কুমলমতি শিশুরা অসুস্থ্য হচ্ছে। বায়তুল হক জামে মসজিদ এর খাদেম জোয়াদ আলী বলেন, মসজিদের ভেতরে কালো কালো ছাই বাতাসাতে উড়ে এসে পড়ে। মসজিদের আশেপাশে টিনসেট বাড়ির টিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সকালে ঘুম থেকে উঠলে কাশির সাথে কালো কালি বের হয়। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক সোহাগ রানা বলেন, কালো ধোঁয়ার পাশাপাশি সাদা ধোঁয়া যখন বের হয় তখন কুয়াশার মত এলাকাটা ঢেকে যায়। চোখ জ্বালাপোডা করে ও শ্বাস কষ্ট হয়। কোনাবাড়ী জরুন কুদ্দুস নগর এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী কৃষকলীগ‘র সভপিতি আবুল হোসেন খান বলেন, চায়না ব্যাটারী তৈরী প্রতিষ্ঠান থেকে যে কালো ধোঁয়া বের হয় তাতে শিশু ও বয়স্ক মানুষের শ^াস কষ্ট হয় বেশী। প্রতিষ্ঠানের নিকটবর্তী আমার বাড়ি, আমি নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি কয়েক বার। আমাদের এই এলাকাটি ঘনবসতীপূর্ণ আবাসিক এলাকা। এখানের ব্যটারী তৈরী প্রতিষ্ঠান স্থাপনের অনুমতি কি করে পায় তাও আমার প্রশ্ন। স্থানীয় কাউন্সিলসহ আমরা প্রতিষ্ঠানকে বার বার পরিবেশ ও বায়ুদূষণ বন্ধ করার জন্য বলেছি তাতে কোন সুফল পাওয়া যায়নি। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. কাউসার আহম্মেদ জানান, বার বার এই চাইনিজ প্রতিষ্ঠানকে বলেছি তাদের প্রতিষ্ঠানের কারণে এলকার সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার ব্যবস্থা নিতে, প্রতিষ্ঠানটি তা মানছেনা কোনভাবেই। কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে প্রতিষ্ঠানের দু‘ভাষী আল আমিন এসে জানান, তাদের পরিবেশগত ছাড়পত্রসহ সকল অনুমতি রয়েছে কারখানা পরিচালনার ক্ষেত্রে। আবাসিক এলাকায় অনাপত্তি ছাড়পত্র (এনওসি) পাওয়ার বিষয়ে শহর পরিকল্পনাবিদ সুমনা সারমিন বলেন, আমরা শুধু মাত্র মেয়রের নির্দেশ পালন করে থাকি। তাছাড়া অবকাঠামোগত রাস্তা ঘাট ব্যবহারের বিষয়ে অনাপত্তি ছাড়পত্র (এনওসি) দিয়ে থাকি। পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশগত দিক দেখবেন আমরা নই। পরিবেশ অধিদপ্তর গাজীপুর জেলা শাখার উপ-পরিচালক মো.নয়ন মিয়া বলেন, গাজীপুর অনেক বড় একটি শিল্পঅধ্যুষিত জেলা। আমাদের স্বল্প জনবল নিয়ে সব কিছু শতভাগ মনিটরিং করা যাচ্ছেনা। এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোজঁখবর নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহন করবো। পরিবেশ অধিদপ্তর দূষণ রক্ষায় বদ্ধপরিকর।
Comments are Closed