গাজীপুরে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রদানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
গাজীপুর প্রতিনিধি :
গাজীপুরের কাপাসিয়ার রাওনাট হাছানিয়া আলিম মাদ্রাসা ও রাওনাট আদর্শ বিদ্যানিকেতনে অনিয়ম, দুর্নীতি, সভাপতির অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এসব অপকর্মের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষা সচিব, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ, মানববন্ধন, অনাস্থা- পদত্যাগ করেছেন কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসীরা। যার ফলে রাওনাট হাছানিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় প্রতিনিধি প্রেরণ করে নি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। এবার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে অভিযোগকারীদের হুমকি-ধামকি প্রদানের পর কমিটির সদস্যদের ম্যানেজ ও এলাকার প্রতিবাদীদেরকে বিভিন্ন কৌশলে চাপ প্রয়োগ করছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে মহানগরীর হাবিবুল্লাহ্ স্মরণীতে রাওনাট হাছানিয়া আলিম মাদ্রাসা ও রাওনাট আদর্শ বিদ্যানিকেতনের সভাপতির অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, গভর্নিং বডি বাতিলের দাবি ও অবৈধভাবে চাপ প্রয়োগের প্রতিবাদে কমিটির পক্ষে মো. মনির হোসেন মোল্লাহ্ ও এলাকাবাসীর পক্ষে আশরাফুল ইসলাম সুমন সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মনির ও সুমন জানান, সভাপতি নজরুল ইসলাম পাঠান উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের নয়ানগর মহিলা মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হলেও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটিতে নিয়োগ বাণিজ্য, সেচ্ছাচারিতা ও অনিয়ম করে আসছে। মাদ্রাসার শূন্য পদে আয়া, অফিস সহকারী ও কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে তিন জনকে তেরো লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান অপরদিকে স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও কাম কম্পিউটার অপারেটর এ দুইজনকে আট লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। সভাপতি নজরুল ইসলাম পাঠান এই বাণিজ্য করলেও কতগুলি আবেদন দাখিলের হিসাব দেননি এমনকি যোগ্য প্রার্থীদের ইন্টারভিও কার্ডও দেননি। ঐ নিয়োগে বিধি বর্হিভূতভাবে বেগুনহাটি ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক মাওলানা মো. লেহাজ উদ্দিন নিয়োগ বোর্ডে থেকে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করেছেন এবং নিয়োগপ্রাপ্ত জাকিয়ার আপন ভাশুর আজিজুল ইসলাম নিয়োগ বোর্ডে দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও মাদ্রাসার হিসাব নম্বরে ব্যাংকে জমাকৃত ১ লাখ টাকা রেজুলেশন ছাড়া উত্তোলন করেছেন নজরুল। শুধু তাই নয় ইতিপূর্বে মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ ১৫ লাখ ও উপাধ্যক্ষ পদে ১০ লাখ টাকা নিয়োগে বাণিজ্যর পায়তারা করছে। সভাপতির অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। আবেদন বাছাই কমিটির সদস্যদের আবেদনপত্রসহ রাতের আঁধারে প্রতিষ্ঠান থেকে বিশ কি.মি দূরে অফিস সহকারীর বাসায় বসে অতিদক্ষ ও যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে পছন্দের প্রার্থী বাছাই করা হয়। বিশ লাখ টাকা চুক্তির বিনিময়ে অধ্যক্ষ পদে পছন্দের প্রার্থীকে বাণিজ্যিক ভাবে নিয়োগের প্রত্যাশায় যোগ্য প্রার্থীদের আবেদন গোপন বা বিবেচনায় না নিয়ে সহযোগী প্রার্থীদের একটি তালিকা মাদ্রাসা অধিদপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। আজিজুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন ও হালিমার সন্তানেরা প্রতিষ্ঠানে না পড়লেও কাল্পনিক অভিভাবক হয়ে গভর্নিং বডির সদস্য হয়েছেন। দাতা সদস্য মোমেন শেখ চার বছরের চেয়ে বেশি সময় প্রবাসে থেকেও দাতা সদস্য প্রার্থীতা থেকে শুরু করে রেজুলেশন সম্পাদনসহ নানা কাজে জাল স্বাক্ষর করে চালাচ্ছেন। প্রথমে অভিযোগকারী ও কমিটি থেকে পদত্যাগকারী, অনাস্থা প্রদানকারীদের হুমকি প্রদান করেন। এবার কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসীকে বিভিন্ন কৌশলে চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বমহলের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
Comments are Closed