Main Menu

‘আগে নাসিরের গোঁফ ছিল না, এখন আছে’

দুই বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন নাসির হোসেন। একটা স্বস্তির বাতাস বয়ে যাওয়ার কথা তাঁর মনে। চারিত্রিকভাবে আমুদে হলেও ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণেরই চেষ্টা করছেন। গত তিন বছরে যেভাবে জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে আছেন, নাসির এখন মাঠে ও মাঠের বাইরে ভীষণ সিরিয়াস।

আজকের সংবাদ সম্মেলনটা নাসির শুরুও করলেন মুখে গাম্ভীর্যের ভাব ফুটিয়ে। কিন্তু ‘খোলস’ থেকে বের হতে খুব সময় লাগেনি ২৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডারের! যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, দুই বছর আগে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া নাসির আর এই নাসিরের পার্থক্য কী? ‘আগে নাসিরের গোঁফ ছিল না, এখন আছে’—এমন উত্তরে সংবাদ সম্মেলন কক্ষ যে হাসিতে ফেটে পড়বে, সেটাই স্বাভাবিক।
পর মুহূর্তেই ‘সিরিয়াস’ নাসির, ‘পার্থক্য তেমন কিছু না। বাদ পড়েছি…খারাপ করলে একজন খেলোয়াড় দলে থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। আবার এটাও সত্য, ভালো খেললে আবার এখানে আসা যাবে। বাদ পড়ার পর থেকেই চেষ্টা করেছি ভালো খেলতে। ক্যারিয়ারে অনেক ভুল ছিল। চাইলে আরও লম্বা ইনিংস খেলতে পারতাম। একটু ক্যাজুয়াল ছিলাম। এখন চেষ্টা করি যত বেশি সম্ভব উইকেটে থেকে ব্যাটিং করার।’
সর্বশেষ জাতীয় লিগে ভালো খেলেছেন। রংপুরের হয়ে তাঁর গড় ১০৯.৩৩! মোট রান ৩২৮ রান। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ২০১ রানও এসেছে সর্বশেষ মৌসুমেই। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের গত আসরও দুর্দান্ত গেছে নাসিরের। চ্যাম্পিয়ন দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ব্যাটিং-গড়টা রীতিমতো অবিশ্বাস্য—২৪০! ৪৮০ রান করে দলের সাফল্যে বড় ভূমিকাই রেখেছেন। গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি ম্যাচে পেয়েছেন ফিফটি। ব্যাটিংয়ে নাসির যেন ফিরে পেয়েছেন তাঁর সেই পুরোনো আত্মবিশ্বাস। ঘরোয়া ক্রিকেটে টানা পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবেই তাঁকে রাখা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে।
নাসিরের উপলব্ধি এখন পারফরম্যান্স ঘিরেই। তিনি বুঝে গেছেন, আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার লম্বা করার একমাত্র উপায় ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা, ‘পারফরম্যান্সই এখানে শেষ কথা। এটা ছাড়া কোথাও টিকে থাকার সুযোগ নেই। পারফরম্যান্স হচ্ছে সবকিছুর ওষুধ। চেষ্টা করব ভালো খেলতে। সত্য কথা বলতে সামনে যে টেস্ট আছে, এসব নিয়ে চিন্তা করছি না। জানি, যদি এখানে ভালো করতে পারি, সুযোগ অবশ্যই আসবে। যদি ভালো না খেলতে পারি, সুযোগগুলো আসবে না।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাসিরের ভীষণ জনপ্রিয়তা। যখনই তিনি বাদ পড়েন, আলোচনা-সমালোচনা আর বিতর্কের ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। একটি প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে—‘নাসির কেন দলে নেই?’ ভক্তদের এই ভালোবাসা স্পর্শ করে তাঁকেও। লাখো ভক্তের প্রত্যাশা পূরণের দায়বদ্ধতা নাসির বেশ অনুভব করেন, ‘আমি খেললে নিউজে থাকি, না খেললেও থাকি! এর যত ইতিবাচক দিক আছে, নেতিবাচক দিকও আছে। এখন যদি ভালো খেলি, ভক্তদের ভালো লাগবে। আর ভালো না খেললে সেটি নেতিবাচকভাবে হয়ে যাবে। চাপ তো একটু থাকবেই। বাংলাদেশের মানুষ আমাকে ভালোবাসে। তাদের কিছু দিতে হবে। চেষ্টা করব সব সময় ভালো খেলতে।’






Comments are Closed